পাকিস্তানি বাহিনী যখন ঢাকায় গণহত্যা শুরু করে তাদের প্রধান কয়েকটা টার্গেট এর মধ্যে একটা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হলগুলোর। আর স্বাধীনতার 53 বছর পরে এসে সেই হলগুলো থেকে মিছিল বের হয়েছে, সেখানে বলা হচ্ছে তুমি কে? আমি কে? রাজাকার! রাজাকার! ব্যাপারটা কেমন হয়ে গেল না? দেখেন কোটা আন্দোলনকারীদের একপাশে রেখে দেই, আপনার দেশের তরুণ প্রজন্ম যে কোন কিছু নিয়ে আপনার কাছে আবেদন করতেই পারে। যেকোনো বিষয়ে আপনার কাছ থেকে অধিকার তার চাইতেই পারে। কিন্তু আপনি অভিভাবক হিসেবে সেটা কিভাবে হ্যান্ডেল করবেন সেটা কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ । আপনার সম্বোধন আপনার কথাবার্তা ইত্যাদির মাধ্যমে যদি একটা গোটা প্রজন্ম মনে কষ্ট পায় তবে সেটা কিন্তু আপনার ব্যর্থতা। রাষ্ট্র নির্দিষ্ট কোন গোষ্ঠীর না, রাষ্ট্র  জনগণের। সেই জনগণের সকল দাবি হয়তো আদায় হবে না কিন্তু সেই জনগণ রাষ্ট্রের কাছ থেকে ন্যূনতম সম্মান প্রত্যাশা করে।  সেই সম্মানের ঘাটতির কারণে যদি দেশের মেধাবী মুখ গুলো নিজেদেরকে রাজাকার বলে সম্বোধন করে তবে এইটা কিন্তু একটা দেশের জন্য অনেক বড় লজ্জার। 
 

সত্যি কথা বলতে দেশের লাখো তরুণ আপনার মুখের দিকে তাকিয়ে ছিল এবং আপনি সমাধান করবেন এমনটা ভেবে রেখেছিল। যেখানে সমাধান দিয়ে অথবা তাদের যৌক্তিক কথাবার্তা বলে তাদের মধ্যে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠা কথা ছিল আপনার। সেখানে এমন কিছু বললেন যাতে গোটা তরুণ প্রজন্ম হতাশ হয়ে গেল। দেখেন একটা গণআন্দোলনে বা গণযুদ্ধের সবাই ফ্রন্টলাইনে থেকে যুদ্ধ করে না। করতে পারে না। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ছিল গণযুদ্ধ, সবাই যুদ্ধ করতে পারেনি বলে এই না যে, তারা রাজাকার বা স্বাধীনতাবিরোধী ছিল। সত্যি কথা বলতে তখন দেশের অবস্থাও আসলে এমন ছিলনা যে সবাইকে ট্রেনিং দিয়ে যুদ্ধের নামানো যাবে। একেক জন একেক ভাবে সহযোগিতা করেছে। তাই কিছু হলেই সবাইকে রাজাকারসহ তুলনা করাটা খুবই হতাশাজনক। সেই সাথে যারা যুদ্ধ করেছেন কিংবা যেই দল যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের প্রতি আমাদের সম্মান এবং শ্রদ্ধার দুইটাই আছে কিন্তু দেশটা এখন গণতান্ত্রিক। সেই গণতান্ত্রিক দেশে কিছু বিষয় মতের মিল তাদের সাথে না হয়, তাহলে কেন আমি স্বাধীনতাবিরোধী হয়ে যাব? কেন আমি রাজাকার হয়ে যাব? আমি তোর দেশকে অন্যের হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে না। কিংবা এমন কিছুও তো চাইছি না যাতে মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান হয়। দেশের স্বাধীনতায় আঘাত আসে। বরং যেটা চাইছি সেটা নিছক আমাদের অধিকার। আপনার সরকারপ্রধান হিসেবে সেটাকে অযৌক্তিক মনে করতেই পারেন কিন্তু এইটার জন্য এমন কোন সম্বোধন দিয়েন না। দেখেন দেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে 50 থেকে 60 হাজারের মতো তরুণ শিক্ষার্থীরা বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে । 
 
তরুণ প্রজন্মের মধ্যে হতাশা যদি আরো বেড়ে যায় দেশটা একসময় মেধাশূন্য হয়ে পড়বে। কেউ আমার দেশকে নিয়ে ভাববেই না। সেটা কিন্তু দেশের জন্য মোটেও মঙ্গলজনক কিছু নয়। তো একটা রাষ্ট্রের অবগতির জন্য সব সময় সেখানে মেধা ভিত্তিক নিয়োগ ব্যবস্থা থাকা দরকার এবং মেধা ভিত্তিক নিয়োগ তার ভেতরে কোন সমাজের জন্য বা কোন গোষ্ঠীর জন্য কতটুকু কোটা থাকবে সেই ব্যাপারে একটা যুক্তি সমাধানে কিন্তু বারবার চাওয়া হচ্ছে। এখানে একবারও বলা হচ্ছে না যে কোটা একেবারে বাতিল করে দেন। কোন ধরনের মুক্তিযোদ্ধা কোটা প্রথা থাকবে না। এই পুরো ব্যাপারটা নিয়ে একটা যৌক্তিক সমাধানের কথা বারবার বলা হচ্ছে যে কোন কোন গোষ্ঠীর জন্য কতটুকু পরিমান কোটা রাখা যায়। যেটা হচ্ছে বিভিন্ন দেশে কিন্তু আমরা দেখে সময়ে সময়ে পরিবর্তন হয়। জনগোষ্ঠীর সংখ্যা পরিবর্তন হয় তাদের সুবিধাভোগীর সংখ্যা পরিবর্তন হয়। সেইটা অনুযায়ী কোটার সংখ্যাও পরিবর্তন হয়। সেই জায়গা থেকে আমাদের দেশেও  এটা সময় হতো এসেছে  এটা নিয়ে একটি যৌক্তিক  আসার। সেই সমাধান কিভাবে আসতে পারে সেটার একটা সঠিক সমাধান চাওয়া হচ্ছিল। আর এই ব্যাপারটাই এমন পর্যায়ে চলে গেল যেখানে একটা বড় সংখ্যক মানুষ বড় সংখ্যক তরুণ প্রজন্ম তারা নিজেদেরকে রাজাকার রাজাকার বলে সম্বোধন করতে শুরু করেছে। এটা কিন্তু হতাশার জায়গা থেকে, ক্ষোভের জায়গা থেকে, রাগের জায়গা থেকে। এইটা একটা দেশের জন্য কোনোভাবেই কাম্য নয়।

এই দেশটা কারও বাপের নয় যে, যে যা ইচ্ছা তাই করবে। আন্দোলনরত ছাত্ররা কখনই কোটাকে পুরাপুরি বাতিল করতে বলা হয়নি। কিন্তু আওয়ামী লীগ নামক মুখোশ ধারী রাজাকারের আসল সন্তারেরা এটা অন্য দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। দেশটাকে পুরাপুরি লুটের রাজ্য করে ফেলেছে তারা। তারা ছাত্রদের অধিকারের আন্দোলনকে রাজনৈতিক চাল বলে প্রশ্নবিদ্ধ করে ছাত্রদের দমিয়ে দিয়ে মেধাকে অবমাননা করছে। মুক্তিযোদ্ধাদের এত কোটা দেওয়ার দরকার কি। 1971 সালের পর থেকে এই 50 বছর যাবৎ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের সুবিধা ভোগ করছে এবং বড় বড় চাকুরীতে নিজেদের অবস্থান পাকা করেছে। এখন তো আর তাদের পরিবার দরিদ্র নয় বা অক্ষমতা নাই যে তাদের কোটার মাধ্যমে সাম্যতা আনতে হবে। যাই হোক আন্দোলন সফল হোক বা না হোক। আমরা ছাত্রদের একটা দাবি থাকবে সকল কোটা মিলিয়ে 5-10% এর মধ্যে আনতে হবে। 

বারবার আওয়ামী লীগ ওরফে মুখোশ ধারী রাজাকারের বংশের মুখ থেকে শোনা যাচ্ছে যে, বিসিএস-এ কোটা নাকি প্রিলি, রিরেট ও ভাইভাই টিকে থাকার পর কার্যকর হয়। কথাটি কি আসলেই সত্য? সে টা কিন্তু নয়। যখনই আবেদন করার সময় মুক্তিযোদ্ধা কোটা দেখানো হয় তখনই তাদের অর্ধেক Selection হয়ে যায়। তারা পরীক্ষা দিলে যদি 100 এর মধ্যে 30 পায় তাহলে তাদের 70-80 দিয়ে দেওয়া হয়। ভাইভার সময় তো শুধু পরিবারের খবর শুনেই পার করে দেওয়া হয়। অন্যদিকে এখন প্রতিটা ক্ষেত্রেই 4/5টি কোটা ব্যবস্থা থাকে। সেটা হোক প্রাইমারি থেকে শুরু করে মাস্টার্স, অফিস সহকারী চাকুরী থেকে বিসিএস কাড্যার চাকুরী সবক্ষেত্রেই শুধু কোটা।
 

 প্রধানমন্ত্রী এক-দুইদিন পর পর নানা রকম আজব আজব কথা বলে জাতির সামনে তাশাসা শুরু করেন। এতে আমার মনে হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বয়স হয়েছে। তাকে প্রধানমন্ত্রির পদ থেকে পদত্যাগ করে বিশ্রামে যাওয়া উচিত।

 উপরোক্ত মন্তব্য সম্পূর্ণ আমার নিজের বক্তব্য। যদি কোথাও কোন ভুল থাকলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবে সংশোধন করার চেষ্টা করবো। ভালা মন্দ কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন।